উদ্ভিদের পুষ্টি উপাদান (পাঠ ১)

সপ্তম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - কৃষিশিক্ষা - কৃষি উপকরণ | NCTB BOOK
535

উদ্ভিদ তার বৃদ্ধি ও পরিপুষ্টির জন্য মাটি, বায়ু ও পানি থেকে কতগুলো উপাদান শোষণ করে। এ উপাদানগুলোর অভাবে উদ্ভিদ সুষ্ঠুভাবে বাঁচতে পারে না। তাই লাভজনকভাবে অধিক শস্য উৎপাদনের জন্য এ পুষ্টি উপাদানগুলো সার হিসেবে প্রয়োগ করে এদের অভাব পূরণ করা হয়। এ উপাদানগুলোকেই উদ্ভিদের পুষ্টি উপাদান বলে। এ পুষ্টি উপাদানগুলোর অভাবজনিত লক্ষণ অন্য কোনো পুষ্টি উপাদান দ্বারা পূরণ করা যায় না। তাই এ পুষ্টি উপাদানগুলোকে অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদান বলে। এখানে উদ্ভিদের পুষ্টি উপাদানের শ্রেণিবিভাগ, কাজ, অভাবজনিত লক্ষণ এবং পুষ্টি উপাদানের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

পুষ্টি উপাদানের শ্রেণিবিভাগ

উদ্ভিদের মোট পুষ্টি উপাদান ১৭টি। উদ্ভিদের গ্রহণমাত্রার উপর ভিত্তি করে এ পুষ্টি উপাদানগুলোকে ২টি শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায়। যথা-

(ক) মুখ্য পুষ্টি উপাদান: উদ্ভিদের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য এ পুষ্টি উপাদানগুলো অধিক পরিমাণে ব্যবহৃত হয়। মুখ্য পুষ্টি উপাদান ৯টি যথা- কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সালফার।

(খ) গৌণ পুষ্টি উপাদান: উদ্ভিদের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য এ পুষ্টি উপাদানগুলো অল্পমাত্রায় প্রয়োজন হয়। গৌণ পুষ্টি উপাদান ৮টি। অল্পমাত্রায় ব্যবহৃত হলেও উদ্ভিদের জীবন রক্ষার জন্য এই উপাদানগুলো অত্যাবশ্যক যথা- লৌহ, ম্যাঙ্গানিজ, মলিবডেনাম, তামা, দস্তা, বোরন, ক্লোরিন, কোবাল্ট।

পুষ্টি উপাদানের উৎস

উদ্ভিদ ২টি উৎস থেকে ১৭টি পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করে থাকে। যথা- (ক) প্রাকৃতিক উৎস ও (খ) কৃত্রিম উৎস।

(ক) প্রাকৃতিক উৎস: মাটি, বায়ু ও পানি এ তিনটি হচ্ছে প্রাকৃতিক উৎস।
মাটি: কার্বন, অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন ব্যতীত বাকি ১৪টি পুষ্টি উপাদান উদ্ভিদ মাটি থেকে পেয়ে থাকে।
বায়ু: উদ্ভিদ কার্বন ও অক্সিজেন বায়ু থেকে গ্রহণ করে।
পানি: উদ্ভিদ হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন পানি থেকে পায়। এছাড়াও উদ্ভিদ পানিতে দ্রবীভূত খনিজ পদার্থও গ্রহণ করে।

(খ) কৃত্রিম উৎস: জৈব সার ও রাসায়নিক সার হচ্ছে উদ্ভিদের পুষ্টি উপাদানের কৃত্রিম উৎস।

জৈব সার: উদ্ভিদের পুষ্টি উপাদানের সবগুলোই জৈব সারে পাওয়া যায়। গোবর, কম্পোস্ট, আবর্জনা, খড়কুটা ও আগাছা পচিয়ে জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

রাসায়নিক সার: ইউরিয়াতে নাইট্রোজেন, টিএসপিতে ফসফরাস, এমওপিতে পটাশিয়াম এবং জিপসামে ক্যালসিয়াম ও সালফারের প্রাধান্য থাকে। এছাড়া জিঙ্ক সালফেটে জিঙ্ক ও সালফার থাকে।

কাজ: শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কয়েকটি দলে বিভক্ত করে প্রতিটি দলে ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি, জিপসাম সারের নমুনা দিবেন। এ সারগুলো প্রধানত কোন কোন পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে তাদের নাম ও ৩টি করে কাজ লিখিয়ে দলীয়ভাবে উপস্থাপন করাবেন।
Content added By
Promotion
NEW SATT AI এখন আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

Are you sure to start over?

Loading...